ট্রাম্পের মন্তব্য: "ভারত অবৈধ অভিবাসন নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেবে"
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত অবৈধ অভিবাসনের বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেবে। এই মন্তব্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপের পর করেন। সোমবার ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়, যা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুই নেতার প্রথম আলোচনা।
হোয়াইট হাউস এই আলোচনাকে "উৎপাদনশীল" বলে অভিহিত করেছে এবং জানিয়েছে যে দুই নেতা অভিবাসন, নিরাপত্তা ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ট্রাম্প আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদি ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সফর করতে পারেন।
২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্প একাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যার মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ৭,২৫,০০০ ভারতীয় অভিবাসী অবৈধভাবে বসবাস করছেন।
গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যে কোনো দেশে থাকা ভারতীয়দের যদি বৈধ নথি ও জাতীয়তা প্রমাণিত হয়, তবে সরকার তাদের গ্রহণ করবে।
সোমবারের ফোনালাপে দুই নেতা প্রযুক্তি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও মত বিনিময় করেন।
হোয়াইট হাউস আরও জানায়, ট্রাম্প ভারতকে আরও বেশি মার্কিন নিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনার আহ্বান জানান এবং দুই দেশের মধ্যে ন্যায্য বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের ওপর জোর দেন।
এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ একটি পোস্টে মোদি ট্রাম্পকে "প্রিয় বন্ধু" বলে উল্লেখ করেন এবং দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দেন।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতি অনুযায়ী, দুই নেতা কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং ইন্দো-প্যাসিফিক কোয়াড সহযোগিতা (যার অংশীদার ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া) আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে সম্মত হন।
চলতি বছরে ভারত প্রথমবারের মতো কোয়াড নেতাদের বৈঠকের আয়োজন করবে।
২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক লক্ষ্য করা গেছে। তবে এই সময়ে বাণিজ্য নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে কিছুটা টানাপোড়েনও ছিল, যা দুই দেশের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।
নভেম্বরে ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে পুরোপুরি প্রস্তুত এবং এতে কোনো শঙ্কা নেই।
ট্রাম্প একদিকে মোদিকে "মহান নেতা" বলে প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে ভারতের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুই নেতার ইতিবাচক সম্পর্ক বাণিজ্য ও অভিবাসন বিষয়ে বিদ্যমান উদ্বেগ দূর করতে কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলে দেবে।